বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত

Lajuk 🤍

4 Aug, 2024

বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর প্রায় এক লক্ষের ও বেশি মানুষ মারা যায় বিষাক্ত সাপের কামড়ে। আমারা যদি কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করি তাহলে এই বিষধর সাপের দংশন থেকে মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে পারি।

বাংলাদেশে যেসব বিষাক্ত সাপ রয়েছে তার মধ্যে সব থেকে বিষাক্ত সাপ হলো চন্দ্রবোড়া সাপ। বর্ষার সময় ঘন আগাছার মধ্যেই থাকে চন্দ্রবোড়া সাপের আস্থানা।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায় জানুন

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে যে তিনটি কাজ করবেন
বিষাক্ত সাপ কামড়ালে যে পাঁচটি কাজ কখনোই করবেন না
বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ জানুন
বিষাক্ত সাপে কাটা উপেক্ষিত রোগ কেনো
বিষক্রিয়ার চিকিৎসা কীভাবে করবেন জেনে নিন
বিষাক্ত সাপের বিষ কীভাবে কাজ করে
বিষাক্ত সাপের বিষের অ্যান্টিভেনম তৈরী
বিষাক্ত সাপ নিয়ে নতুন গবেষণা
বিষাক্ত সাপে কামড়ানো মুরগি বা প্রাণী খাওয়া যায় কিনা
বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ সম্পর্কে লেখকের শেষ কথা

বিষাক্ত সাপ কামড়াবলে যে তিনটি কাজ করবেন

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকে অবগত নই। রাতের বেলায় বিষধর সাপ বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। ছোবল মারার আগে নিস্তেজ অবস্থায় অনেকক্ষণ নিজেকে লুকিয়ে রাখে। দীর্ঘ সময় নড়াচড়া করে না বিষধর সাপ। তারপর হঠাৎই ভয়ানকভাবে ছোবল বসায়। আমরা আগে জেনেছি বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায় তার মধ্যে সবচেয়ে বিষাক্ত হল চন্দ্রবোড়া।

১০০ বছর আগে এই প্রজাতির সাপ বাংলাদেশে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করা হলেও গত বছর দশেক ধরে এই সাপের দংশন এর ঘটনা শনাক্ত হয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেকনোলজি সোসাইটি। এরা সচরাচর ইঁদুর প্রজাতির প্রাণী বা ছোটখাটো ব্যাঙ শিকার করে মানুষ সচরাচর তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু থাকে না।

বিষধর সাপের কামড় থেকে রক্ষা পেতে আমাদের যে তিনটি কাজ করা উচিত তা হল বাড়ির আশেপাশে ঘাস বা আগাছা পরিষ্কার করা। যেকোনো গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না। রাতে চলাফেরা করার সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করবেন। ক্ষেত খামারে কাজ করার সময় কৃষকদের উচিত অবশ্যই গামবুট ব্যবহার করা। বাড়ির আশেপাশে আবর্জনা পরিষ্কার করুন।এরকম সর্তকতা অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে যে পাঁচটি কাজ কখনোই করবেন না

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ গুলো আমরা জেনেছি এখন বিষাক্ত সাপের কামড়ালে যে পাঁচটি কাজ করা কখনই উচিত নয় তা হলো বিষাক্ত সাপে কামড়ালে আমাদের স্থির থাকতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে বেশি নড়াচড়া করলে বিষ দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পরতে পারে। সাপ দেখলে তা কখনো হুট করে মারার চেষ্টা করবেন না।

চন্দ্রবোড়ার দংশন ভয়ানক এর কারণ হলো তাদের শিকারের ধরন। ঘাস বা আগাছার মধ্যে দিয়ে তারা চলে অতি ধীরে ধীরে আর মনে হয়না তারা নড়াচড়া করছে। গায়ের সবুজ ও বাদামি চাকা চাকা দাগের কারণে দিনের বেলা তারা ঘাস বা আগাছার রঙের সাথে মিশে থাকে। আর রাতের বেলায় তাদের দেখতে পাওয়া আরো কঠিন।

আরো পড়ুনঃ অ্যালার্জি যেসব কারণে হয় জেনে নিন

ধানক্ষেত্রে বা বেড়ে ওঠা আগাছার মধ্যে তাদের গায়ের উপর অসাবধানে পা পড়লেই তারা ভয়ানক হয়ে ওঠে তারপর হামলা হচ্ছে এটা ধরে নিয়ে ধরে নিয়ে সে ঘনঘন ছোবল বসায়। বিশেষ করে যে সকল কৃষকেরা ক্ষেত খামারে কাজ করেন তারা চন্দ্রবোড়া সাপে কাটার আশঙ্কায় বেশি থাকেন। কৃষক ভাইদের উচিত একটু সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করা।

বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ জানুন

বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। ভারতের প্রতি বছর সর্পদংশনের শিকার হয় প্রায় ২৮ লাখ মানুষ এবং অনেক মানুষ মারা ও যায় তাদের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। সম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে গত ২ দশকে শুধু ভারতেই সাপের কামড়ে মারা গেছে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ।

সাপে কামড়ানোর পর যারা প্রাণে বেঁচে যান তাদের জীবনে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব পরে। দংশনের কারণে অনেকের জীবন জীবিকা করুন ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরে। অনেক ক্ষেত্রে অনেকে প্রতিবন্ধী হয়ে যায় এবং কাজ করার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলে। বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ করার মাধ্যমে এই সমস্যা গুলো আমরা অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারি

সম্প্রীতি একজন হলুদ চাষীর পায়ে সাপে ছোবল মেরে ছিল। সে ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করছিল তার গোলারির চারপাশে মাংস পচে গেছে এবং ওই পচন হাটু পর্যন্ত ছড়িয়েছে এখন সে আর কোন কাজকর্ম করতে পারে না ডাক্তার তার পায়ের পচে যাওয়া অংশ কেটে বাদ দিতে বলেছে। পরিবারের খাওয়া পরা জোগাতে এখন তার স্ত্রীকে বাড়তি কাজ খুঁজতে হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটছে ঘরে ঘরে।

আমাদের উচিত সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করা। সর্প দংশনের কিন্তু একটা বিরাট মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে যা নিয়ে গবেষণার কাজ সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সাপে কাটার মানসিক প্রভাব ও কিন্তু মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে। অনেকে সাপে কাটার পর আর কাজ করতে পারে না আবার কেউ কেউ প্রতিবন্ধী হয়ে পরে। প্রতিবন্ধী অল্পবয়সী মেয়ের বিয়ে হয় না তারা ঘরবন্দি হয়ে যায় এবং অনেকে চিকিৎসার খরচ জোগাতে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়।

বিষাক্ত সাপে কাটা উপেক্ষিত রোগ কেনো

বিষাক্ত সাপে কাটাকে অনেকে উপেক্ষিত রোগ বলে মনে করে এবং অনেকে বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ করেনা। তারা সাপে কাটাকে গুরুত্ব দেয় না এর ফলে এটি অনেক ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। প্রতিবছর সারা বিশ্বের সাপের কামড়ের শিকার হয় প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ এবং তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ২৭ লাখ।

নারী এবং শিশু শারীরিক ভাবে বড় ধরনের ক্ষতি স্বীকার হয় বলে জানাচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এর মধ্যে অন্যতম হলো গ্লোবাল স্নেকবাইট ইনিশিয়েটিভ। সাপে কামড়ের সমস্যা মোকাবেলা করছে এই সংস্থাটি এবং সাপের দংশন যে কতটা ব্যাপক সমস্যা বহু মানুষ তা বোঝেনা। বিশ্ব সংস্থা মনে করেন সাপের কামড় কোন কোন সম্প্রদায়ের জন্য বিশাল একটা সমস্যা এবং সেই বিবেচনা থেকে তারা সম্প্রতি সাপের কামড়ের কারণে মানুষের শরীরে ঘটা বিষক্রিয়াকে উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের একটা উপেক্ষিত রোগ হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করেছেন

সাপে কাটা কে এখন বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে উপেক্ষিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যে সমস্যা বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর ব্যাখ্যা করেছেন আমেরিকার অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে সংস্থা সাপের বিষ প্রতিরোধে রসায়ন এর ঔষধ ও জরুরী চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করছে তার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক লেসলি বয়ার।

বিষক্রিয়ার চিকিৎসা কীভাবে করবেন জেনে নিন

বিষক্রিয়ার চিকিৎসা হিসেবে যা করবেন তার কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো। লেসলি বয়ার বলেন, “প্রায় ১২০ বছর ধরে আমরা জানি সাপের বিষ কাটানোর ঔষুধ বা অ্যান্টিভেনম কিভাবে তৈরি করতে হয়” সাপের বিষক্রিয়ার চিকিৎসা করতে মূলত সাপের বিষের প্রয়োজন হয়। অ্যান্টিভেনম বা সাপে কামড়ানোর ওষুধ তৈরি করতে হয় সাপের বিষ থেকে।

ফ্রান্সের পাস্তুর ল্যাবরেটরীতে বিজ্ঞানীরা বহুকাল আগে থেকে অ্যান্টিভেনম তৈরির কিছু কাজ করছেন এছাড়াও ইংল্যান্ডের লিস্টার ইউনিভার্সিটি এবং ব্রাজিলের বুতানতান ইউনিভার্সিটিতেও অ্যান্টিভেনম নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। অনেক অ্যান্টিভেনম ভালো কাজও করে। সঠিক অ্যান্টিভেনম জোগাড় করা এবং অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করে বিষক্রিয়া বন্ধের চিকিৎসা খুবই ব্যয় বহুল হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মানুষ যখন চলতে গিয়ে অজান্তে সাপের গায়ে পা দেয় তখনই সাপ ছোবল দেয়। সাধারণত ৯০% সর্পদংশনের ঘটনা এভাবে ঘটে। আমরা সাধারণত যে কোন বিষধর সাপে কামড় দিলে শক্ত কোন কাপড় বা দড়ি দিয়ে বাঁধ দেই। বিষধর সাপ কামড় দিলে আমাদের উচিত কামড়ানো স্থানে ফার্মেন্টেশন ব্যান্ডেজ প্রয়োগ করা যাতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে এবং ধীরে ধীরে কমে যায়। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোন হাসপাতালে বা চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীকে নিয়ে যাওয়া এবং দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা।

বিষাক্ত সাপের বিষ কীভাবে কাজ করে

বিষাক্ত সাপের বিষ হলো অনেক ধরণের বিষাক্ত পদার্থের সংমিশ্রণ। সাপের প্রজাতি ভেদে এই বিষের ধরন আলাদা আলাদা হয়। বিষাক্ত সাপের বিষে থাকা কিছু জারক রস এবং অল্প মাত্রায় কিছু প্রোটিন আমাদের শরীরের যে স্নায়ু কোষগুলো মস্তিস্কে বার্তা প্রেরণ করে সেগুলোর বার্তা প্রেরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। এর প্রভাবে আমাদের মাংশপেশিতে দ্রুত সংকোচন শুরু হয়, মাংসপেশি অসাড় হয়ে যায় এবং ব্যথা হতে থাকে।

বেশির ভাগ বিষই মানুষের ক্ষতি করে এবং এটি তখনই হয় যখন এটি ত্বকের টিস্যুতে গভীর ভাবে প্রবেশ করে। আমরা জানি সাপের বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে সাপ মানুষকে কামড় দেওয়ার ফলে। সাপের মুখে যে বিষদাঁত রয়েছে তা থেকে নিঃসৃত বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে যখন মানুষটিকে সাপে কামড় দেয়।

বিষ এমন একটি পদার্থ যাতে রয়েছে বিষাক্ত এনজাইম এবং বিভিন্ন প্রোটিনের মিশ্রণ। এটি শরীরে বিভিন্ন উপায়ে কাজ করে। নিউরোটক্সিন বিষ সাধারণ মস্তিষ্ক আর স্নায়ুতন্ত্রের উপর আক্রমণ করে। এর ফলে স্নায়বিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পেশি মোচড়ানো, পেশিতে টান ধরা, বমি হওয়া এবং খিঁচুনি ইত্যাদি উপসর্গ আমরা সাপে কাটা মানুষের মধ্যে দেখতে পাই। এছাড়াও স্নায়বিক বিষণ্নতা যেমন প্যারালাইসিস, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদস্পন্দন দুর্বল হওয়া বা আটকে যাওয়া।

হিমোটক্সিন বিষ মানুষের রক্ত আর রক্তনালী গুলোকে প্রভাবিত করে। এই বিষ কিছু ছোটো রক্তনালী গুলোর আস্তরণকে নষ্ট করে আর রক্তকে টিস্যুতে প্রবেশ করতে দেয় না। অনেক বেশি এবং স্থানীয় রক্ত ক্ষরণ সৃষ্টি করে। অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধে, যার ফলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া অন্যান্য বিষ অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া তৈরী করে যার ফলে চাকা চাকা ফোসকা আর হিংস্র প্রদাহের সৃষ্টি হয়, খিঁচুনি হয় এর ফলে অনেকে মারা ও যেতে পারে।

বিষাক্ত সাপের বিষের অ্যান্টিভেনম তৈরী

বিষাক্ত সাপের বিষের অ্যান্টিভেনম মূলত সাপের বিষ থেকেই তৈরী করা হয় এই বিষয়টি হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। অ্যান্টিভেনম বা সাপের বিষের প্রতিকার তৈরী কঠিন কিছু নয় যদি আপনি এটি তৈরীর সঠিক পদ্ধতিটা জানেন। অ্যান্টিভেনম তৈরীর জন্য প্রয়োজন মূলত একটি ঘোড়ার বা একটি ভেড়ার। অ্যান্টিভেনম একটি জৈবিক পণ্য যা সাধারণত ঘোড়া বা ভেড়ার মতো হোস্ট প্রাণীর থেকে প্রাপ্ত বিষ নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি নিয়ে গঠিত।

আপনি সাপের বিষ কাটানোর জন্য ঔষধ বানাতে চাইছেন তার জন্য আপনার সেই সাপের শরীর থেকে বিষ সংগ্রহ করতে হবে। তারপর সেই বিষ খুবই অল্প মাত্রায় ঘোড়ার বা ভেড়ার শরীরে ঢুকাতে হবে। বিষ ঢোকানোর ফলে ঘোড়ার বা ভেড়ার শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে সে অ্যান্টিবডি কে বিশুদ্ধ করে নিয়ে তা সাপে কাটা মানুষের শরীরে দিলে সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব।

কিন্তু অ্যান্টিভেনম ঠিকমতো কাজ করাতে হলে অনেকটা পরিমাণ অ্যান্টিভেনম সাপে কামড়ানো মানুষকে দিতে হয় কারণ ঔষধ কার্যকর হতে হলে বেশ অনেকটা অ্যান্টিবডির প্রয়োজন হয়। অ্যান্টিভেনম মূলত নির্ভর করে কি ধরনের সাপে মানুষটিকে দংশন করেছে এবং তার পরিমাণটা ও নির্ভর করে এই সাপের দংশনের উপরে। অ্যান্টিভেনম দামে সস্তা নয় এইজন্য অনেক সময় বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের অ্যান্টিভেনম দিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য থাকে না।

বিষাক্ত সাপ নিয়ে নতুন গবেষণা

বিষাক্ত সাপ নিয়ে নতুন গবেষণা শুরু হয়েছে এবং এটি বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ এর মধ্যে পরে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাপের কামড়ের ঔষধ বা অ্যান্টিভেনম তৈরী করার জন্য গবেষণার কাজ করছে। বিজ্ঞানীরা অ্যান্টিবডি ভিত্তিক চিকিৎসার উপর বেশি গুরুত্বারোপ করছেন। ব্যাপক সংখ্যক প্রজাতির সাপের বিষ নিরাময়ে যে অ্যান্টিবডি কাজ করবে সেইটা নিয়ে কাজ গবেষণা করছেন তারা।

বিষাক্ত সাপের বিষ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লরা-ওয়ানা আলবুলেস্কু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটি ঔষধ তৈরীর ব্যাপারে কাজ করছেন যা মুখে খাওয়ার ঔষধ হিসেব ব্যবহার করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন এই ক্যাপসুল খাওয়ার পর তা বিষ নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করবে আর সাপে কামড়ানো মানুষের দ্রুত অবস্থার অবনতি হওয়া রোধ করতে সাহায্য করবে।বিভিন্ন প্রজাতির সাপের বিষ নিয়ন্ত্রণ করবে এমন ধরনের উপাদান উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে বিশেষজ্ঞ লরা-ওয়ানা আলবুলেস্কু ও তার সহযোগীরা।

এর কারণ হলো অনেক সময় কোনো ব্যক্তিকে সাপে কামড় দিলে সে বুঝতে পারেনা যে তাকে কোন সাপটি কামড় দিয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞ লেসলি বয়ার বলেন এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঔষধ তৈরী করা সম্ভব হয়নি যা সব সাপের বিষ নিরাময়ে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এমন ঔষধ তৈরীর কাজ চলছে যা বিষাক্ত সাপে কামড়ানো মানুষকে প্রাথমিক শুশ্রূসা প্রদান করবে যাতে করে সে চিকিৎসা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় এবং বিষ যাতে দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে না পরে ও অঙ্গ-পতঙ্গ বিকল না হয়ে যায়।

বিষাক্ত সাপে কামড়ানো মুরগি বা প্রাণী খাওয়া যায় কিনা

বিষাক্ত সাপে কামড়ানো মুরগি বা প্রাণী খাওয়া যায় কিনা এটা নিয়ে অনেক দ্বিমত রয়েছে। অনেকে এটা কে নিরাপদ মনে করেন আবার অনেকে মনে করেন না।তবে বিষাক্ত সাপে কামড়ানো হাঁস, মুরগি বা অন্য কোনো প্রাণী না খাওয়াই ভালো।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হাঁস, মুরগির মাথা গুইসাপে কামড় দিয়ে নিয়ে চলে গেছে। সেই ক্ষেত্রে এটি খাওয়া যাবে না। ইসলামিক শরিয়ত মোতাবেক আমরা জানি কোনো হালাল প্রাণী অথবা পাখি যবেহ করার আগে বিসমিল্লাহ পরে যবেহ করা হয়। গুইসাপে কামড় দিয়ে মাথা নিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ায় যেহেতু যবেহ করার কোনো সুযোগ হয়নাই সুতরাং তা খাওয়া হারাম এর পর্যায়ে পরে।

গুয়াডাং এবং চংকিং চীনে স্নেক বাইট চিকেন নামক একটি বিতর্কিত খাবার পরিবেশন করা হয়। এই থালাটিতে একটি বিষাক্ত সাপ থাকে যাকে বাধ্য করা হয় একটি মুরগিকে কামড়ানোর জন্য। মুরগিকে কামড়িয়ে মুরগির মাথায় বিষ ঢুকানো হয়। মুরগিটি মারা যেতে ১০ মিনিট সময় লাগে তবে শক্তিশালী মুরগি হলে আরো কিছুক্ষণ সময় লাগতে পারে। এই সম্পূর্ণ তথ্যটির সঠিক উৎস এখনো অজানা তাই পাঠকদের কাছে এটি অস্পষ্ট বা বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে।

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ সম্পর্কে লেখকের শেষ কথা

বিষাক্ত সাপ কামড়ালে করণীয় কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলটিতে। বিষাক্ত সাপ কামড়ালে কী কী করবেন, সাপে কামড়ানোর পর প্রাথমিক চিকিৎসা, সাপে কামড়ালে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ এবং অ্যান্টিভেনম তৈরী এই সব কিছুই আশা করছি এই আর্টিকেলটি পরে আপনারা জানতে পেড়েছেন।

এতটা সময় ধরে আমার ওয়েবসাইটর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনি যদি নিয়মিত এমন গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন এবং আমার ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন। কারণ আমার ওয়েবসাইটটিতে প্রতিনিয়ত এমন আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।